সূরা নাস বাংলা অনুবাদ, উচ্চারণ, আরবি, শানে নুযুল ও ফজিলতসমুহ | Sura Nas Bangla Uccharon, Anubad, Fojilot: মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনুল মাজীদে আল্লাহ তায়ালার নাজিলকৃত ১১৪টি সুরার মধ্য এই সূরা ১১৪তম এবং আর এই সূরা সর্বশেষ সূরা, আর নাম হচ্ছে সূরাতুন নাস (sura nas bangla)। যা আমরা (surah nas bangla) “কুল আউযুবি রাব্বিন নাস” হিসাবে অনেকে জানি অথবা ৪ কুল সুরাদের মধ্য একটি হিসাবেও জানি। এই (sura nas bangla) নাস সুরাটির মধ্য আল্লাহ তায়ালা ৬টি আয়াত দিয়েছেন এবং এই সূরাটি আল্লাহ তায়ালা মদীনায় অবতীর্ণ করেন, তাই এই সুরাটিকে (surah nas bangla) মাদানী সূরার শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে।
এই সুরাটি (sura nas bangla) মূলত একটি প্রার্থনামূলক। শয়তানের অনিষ্ট বা ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা হয় এই সূরাতে (surah nas bangla)। আর সূরা আন নাস Sura Nas ও সূরা আল ফালাককে (Sura Al Falaq) একত্রে মু’আওবিযাতাইন (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার দু’টি সূরা) নামে উল্লেখ করা হয়। Also Read: Ayatul Kursi Bangla
সূরা নাস বাংলা উচ্চারন ও অর্থ | Sura Nas Bangla Uccharon
সুরা আন নাস এর বাংলা উচ্চারন ও অর্থ | Sura Nas Bangla Uccharon onubad: এখানে আমরা সঠিক সূরা নাসের বাংলা উচ্চারণ দেখব, এবং সাথে অনুবাদ বা অর্থ দেখতে পাব। আর আমাদের আরবী জানা না থাকলে আমরা এই বাংলা বানান খিয়াল করে দেখে মুখস্ত করে নিতে পারি। তাহলে চলুন নিম্নে লিখিত আমরা দেখে নেই:
“বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।”
- “কুল আউযু বি-রাব্বিন-নাস”
- “মালি-কিন-নাস”
- “ইলা-হিন-নাস”
- “মিন – শার-রীল ওয়াস ওয়া-সিল খান-নাস”
- “আল্লা-যি ইউওয়াছ ইসু ফী সুদু-রিন-নাস”
- “মিনাল জিন-ন্নাতি ওয়ান-নাস।”
Surha Nas Bangla anubad – সূরা নাস বাংলা অর্থ অনুবাদ
Surha Nas Bangla Anubad অর্থ:পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে, মানুষের প্রভুর আল্লাহর কাছে। আর তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণ করছি।
Recent Post: Ayatul Kursi Bangla
সুরা আন নাস নামকরণ – Surha Nas Bangla Namkoron
সুরা আন নাস নামকরণ – Surha Nas Bangla Namkoron: তাহলে এখানে আমরা জানতে পারব, কিভাবে এই সূরার নামকরণ সূরা নাস (Sura Nas) নাম। যা আমাদের জানা প্রয়োজন কারণ এই জন্য যে , যদি আমরা জানতে পারি এই সূরা কেন সুরাতুন নাস নাম রাখা হয়। তাহলে আমরা অবশ্যই এর গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হবো। ইনশা-আল্লাহ ,তাহলে নিম্নেলিখিত আছে দেখেনিন :
➡ কুরআন মজীদের এ শেষ সূরা দু’টি (Sura Nas) -(Sura Falaq) আলাদা আলাদা সূরা ঠিকই এবং মূল লিপিতে এ সূরা (Sura Nas) -(Sura Falaq) দু’টি ভিন্ন ভিন্ন নামেই লিখিত হয়েছে, কিন্তু এদের পারস্পরিক সম্পর্ক এত গভীর এবং (Sura Nas) -(Sura Falaq) উভয়ের বিষয়বস্তু পরস্পরের সাথে এত বেশী নিকট সম্পর্ক রাখে যার ফলে এদের একটি যুক্ত নাম “ মু’আওবিযাতাইন ” ( আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়ার Sura Nas-Sura Falaq দু’টি সূরা ) রাখা হয়েছে ।
➡ ইমাম বায়হাকী তাঁর ” দালায়েলে নবুওয়াত ” বইতে লিখেছেন : এ সূরা দু’টি (Sura Nas) -(Sura Falaq) নাযিলও হয়েছে একই সাথে । তাই উভয়ের (Sura Nas) -(Sura Falaq) যুক্তনাম রাখা হয়েছে যু’আওবিযাতাইন ” । আমরা এখানে উভয়ের জন্য একটি সাধারণ ভূমিকা লিখছি। কারণ এদের উভয়ের সাথে সম্পর্কিত বিষয়বলী ও বক্তব্য সম্পূর্ণ একই পর্যায়ভুক্ত । তবে ভূমিকায় একত্র করার পর সামনের দিকে প্রত্যেকের আলাদা ব্যাখ্যা করা হবে।
আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ অর্থ, আরবী এবং ফজিলত সমুহ | Ayatul Kursi Bangla and Arabic with Fajilat
সূরা নাস নাযিলের সময়কাল | Sura Nas Bangla Period of Revelation of Surah Nas
➡ (Surha Nas bangla) – (Surha Falaq Bangla): হযরত হাসান বসরী, ইকরামা আতা ও জাবের ইবনে যায়েদ বলেন এ সূরা (Sura Nas) -(Sura Falaq) দু’টি মক্কী। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকেও এ ধরনের একটি উক্তি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু তাঁর অন্য একটি বর্ণনায় (Sura Nas) -(Sura Falaq) মাদানী বলা হয়েছে ।
আর হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যোবায়ের (রা) ও কাতাদাহও একই উক্তি করেছেন। যে সমস্ত হাদীস এ দ্বিতীয় বক্তব্যটিকে শক্তিশালী করে তার মধ্যে (Sura Nas) -(Sura Falaq) মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বলে..
➡ হযরত উকবা ইবন আমের (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন একটি হাদীস হচ্ছে : একদির রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেন :” ‘ হে উম্মতগণ তোমরা কি কখনো কোন খবর রাখো? আজ রাতে আমার ওপর আল্লাহ তায়ালা কেমন ধরনের আয়াত নাযিল করেছেন?
আর এইটা ছিল এমন এক আয়াত যা নজীরবিহীন আয়াত ! কুল আউযু বিরব্বিল ফালাক এবং কুল আউযু বিরব্বিন নাস।” অর্থাৎ (Sura Nas) -(Sura Falaq).
➡ হযরত উকবা ইবনে আমের (রা) হিজরাতের পরে মদীনা তাইয়েবায় ইসলাম গ্রহণ করেন বলেই এ হাদীসের ভিত্তিতে এ সূরা দু’টিকে যদানী বলার যৌক্তিকতা দেখা দেয়। আবু দাউদ ও নাসাঈ তাদের বর্ণনায় একথাই বিবৃত করেছেন।
➡ অন্য যে রেওয়ায়াতগুলো এ বক্তব্যকে শক্তিশালী করেছে সেগুলো ইবনে সা’দ, মুহিউস সুন্নাহ বাগাবী, ইমাম নাসাঈ, ইমাম বায়হাকী, হাফেজ ইবনে হাজার · হাফেজ বদরুদ্দীন আইনী, আবদ ইবনে হুযায়েদ এবং আরো অনেকে উদ্ধৃত করেছেন।
➡ সেগুলোতে বলা হয়েছে : ইহুদিরা যখন মদীনায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর যাদু করেছিল এবং তার প্রভাবে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তখন এ সূরা নাযিল হয়েছিল। ইবনে সাদ ওয়াকেদীর বরাত দিয়ে বর্ণনা করেছেন, এটি সপ্তম হিজরীর ঘটনা।
এরই ভিত্তিতে সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাও এ সূরা দু’টিকে মাদানী বলেছেন। কিন্তু ইতিপূর্বে সূরা ইখলাসের ভূমিকায় আমরা বলেছি, কোন সূরা বা আয়াত সম্পর্কে যখন বলা হয় J উমুক সময় সেটি নাযিল হয়েছিল। তখন এর অর্থ নিশ্চিতভাবে এ হয় না যে, সেটি প্রথমবার ঐ সময় নাযিল হয়েছিল।
➡ বরং অনেক সময় এমন ও হয়েছে, একটি সূরা বা আয়াত প্রথমে নাযিল হয়েছিল তারপর কোন বিশেষ ঘটনা বা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পুনর্বার তারই প্রতি বরং কখনো কখনো বারবার তার প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টি আকৃষ্ট করা হয়েছিল।
➡ আমাদের মতে সূরা নাস (surah nas) ও সূরা ফালাকের ব্যাপাটিও এ রকমের। এদের বিষয়বস্তু পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছে প্রথমে মক্কায় এমন এক সময় সূরা দু’টি নাযিল হয়েছিল যখন সেখানে নবী করীমের (সা) বিরোধিতা জোরেশোরে শুরু হয়ে গিয়েছিল।
➡ পরবর্তীকালে যখন মদীনা তাইয়েবায় মুনাফিক, ইহুদি ও মুশরিকদের বিপুল বিরোধিতা শুরু হলো, তখন তাঁকে আবার ঐ সূরা দু’টি পড়ার নির্দেশ দেয়া হলো । ওপরে উল্লেখিত হযরত উকবা ইবনে আমেরের (রা) রেওয়ায়াতে একথাই বলা হয়েছে। তারপর যখন তাঁকে যাদু করা হলো এবং তাঁর মানসিক অসুস্থতা বেশ বেড়ে গেলো তখন আল্লাহর হুকুমে জিব্রীল আলাইহিস সালাম এসে আবার তাঁকে এ সূরা দু’টি পড়ার হুকুম দিলেন ।
➡ তাই আমাদের মতে যেসব মুফাসসির এ সূরা দু’টিকে মক্কী গণ্য করেন তাদের বর্ণনাই বেশী নির্ভরযোগ্য। সূরা ফালাকের শুধুমাত্র একটি আয়াত ( আরবী ~~~~~~~) যাদুর সাথে সম্পর্ক রাখে ছাড়া আল ফালাকের বাকি সমস্ত আয়াত এবং সূরা নাসের সবকটি আয়াত এ ব্যাপারে সরাসরি কোন সম্পর্ক রাখে না। যাদুর ঘটনার সাথে এ সূরা দু’টিকে সম্পর্কিত করার পথে এটিও প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।
আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ অর্থ, আরবী এবং ফজিলত সমুহ | Ayatul Kursi Bangla and Arabic with Fajilat
চার কুল সুরার ফজিলত । 4 qul surah bangla Fojilot
এখানে আমরা জানতে পারব চার্ কুল সূরার ফজিলত – 4 qul surah bangla Fojilot, যা আমাদের জানা প্রয়োজন যে এই সূরা কেন নাজিল করলেন আমাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা। নিশ্চয় এর কারণ অবশ্যই রয়েছে, সেজন্য এখানে জানতে পারি কেন চার কুল সুরার – 4 qul surah bangla-y
➡ হাদীস রয়েছে, হযরত উরওয়া বিন নাউফেল (রহঃ) তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন রাসূল সাঃ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তুমি কেন এসেছো? তখন তিনি বললেন, আমি এখানে আপনার কাছে এজন্য এসেছি যে, যাতে আপনি আমাকে কিছু শিক্ষা দেন, যা আমি ঘুমানোর (শোয়ার) সময় পড়তে পারি।
তখন রাসূল সাঃ ইরশাদ করলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন তুমি এই সূরা কাফিরুন “কুল ইয়াআয়্যুহাল কাফিরূন” পড়বে। তারপর এটি শেষ করে তুমি গুমিয়ে পড়ো । কেননা, এই সূরা তোমাকে শিরক থেকে মুক্ত করে।
আলআদাব লিইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৩, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬৫২৮, সুনানে কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-১০৫৬৯
➡হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: প্রতি রাতে রাসূল সাঃ যখন বিছানায় আসতেন, তখন দুই তালুকে একত্র করতেন। তারপর তাতে ফুঁ দিতেন। পড়তেন (Sura Ekhlas) “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” এবং (Sura Falaq)“কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক” ও (Sura Nas) “কুল আউজু বিরাব্বিন নাছ”। তারপর শরীরের যতটুকু অংশ সম্ভব মুছে দিতেন। শুরু করতেন মাথা ও চেহারা ও শরীরের সামনের অংশ থেকে। এভাবে তিনবার করতেন।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৮৫৩, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০১৭
Sura Nas Bangla উপসংহার:
এই ছিল আমাদের আজকের “সূরা নাস বাংলা অনুবাদ, উচ্চারণ, আরবি, শানে নুযুল ও ফজিলতসমুহ | Sura Nas Bangla Uccharon, Onubad, Fojilot” আশা করি আজ আপনাদের জন্য ভালো একটা কিছু করতে পেরে আমি শান্তি পেলাম। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য সহজ করে দেন, যাতে আমরা আমাদের জিবনকে সুন্দর করে দেন এবং সঠিক পথে চলতে পারি আল্লাহ যেন তৌফিক দান করেন। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আর আমাদের সাথে থাকুন।
এই রকম আরো পেতে আপনি আমার সোসিয়াল মেডিয়াতে জয়েন হতে পারেন, এবং আজকের এই পোষ্ট শেয়ার করেন তাহলে শেয়ার করুন আপনাদের বন্ধুদের মাঝে, ফলো করুন, আমার ফেইসবুকে, ইনস্টাগ্রামে, টুইটার থাকলে ফলো করতে পারেন, আর চাইলে ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে পারেন। ধণ্যবাদ